মনোহরগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে হেফজ বিভাগের শিশু শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে (৯) আয়রন মেশিন দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার মত অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের গোয়ালিয়ারা খোলাফায়ে রাশেদীন নূরানী ও হাফেজিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষার্থী মাদরাসায় না আসায় এমন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগে জানা যায়। মেহেদী হাসান গোয়ালিয়ারা গ্রামের মোস্তফা ও মর্জিনা বেগমের ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সাজ্জাদুর রহমান। তিনি ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগ ও আবাসিকের দায়িত্বরত। স্থানীয়রা জানান, মেহেদী হাসান গোয়ালিয়ারা খোলাফায়ে রাশেদীন নুরানী ও হাফেজিয়া মাদরাসায় হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত। ভর্তি হওয়ার পর থেকে সে মাঝে-মধ্যে মাদরাসায় না আসার তালবাহানা ধরতো। এতে তার পিতা ও মাতা তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে মাদরাসায় পাঠাতো। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত ১০টা বেজে গেলেও মেহেদী হাসান মাদরাসায় না আসায় দায়িত্বরত শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে ধরে আনতে নির্দেশ দেন। তারা মেহেদীকে টেনেহিছড়ে ধরে আনার সময় সে গাছ জাপটে ধরে রাখে। ফলে হাতে ব্যথা পায় বলে অভিযোগ করে দায়িত্বরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রচার চালায়।এদিকে, সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে গরম আয়রনে ছ্যাকা দিয়ে ঝলসে যাওয়ার বিষয়টি প্রচারিত হলে চাপা গুঞ্জন ও সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি জানতে পেরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মেহেদীর বাড়িতে যায়। তাৎক্ষনিক শিক্ষকের ভয়ে মেহেদী পালিয় যায়। ওই সময় তারা দায় এড়াতে মেহেদী গাছের সঙ্গে ব্যথ্যা পায় বলে জানায়। মেহেদীর মা মর্জিনা বেগম জানান, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে তাকে ধরে নেওয়ার পরদিন ফজরের পর সে বাড়ি যাবে বলে কান্নাকাটি করে ও চিল্লাপাল্লা করলে একপর্যায়ে শিক্ষক তাকে গরম আয়রন দিয়ে হাতে ও কাঁধে ছ্যাকা দেয়। এতে ওই স্থান সমূহ ঝলসে যায়। তিনি আরও জানান, ছেলে বাড়িতে এসে কসম দিয়ে বলেছে যাতে কাউকে না জানাই। হুজুর তাকে এই ঘটনা কাউকে না বলতে নিষেধ করেছেন। তাই কয়েকদিন বিষয়টি গোপন ছিল। এ বিষয়ে জানার জন্য মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা ফারুক আহমেদ ও অভিযুক্ত শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।