প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:৩৪ পিএম (ভিজিটর : )
দেশবাসীকে সতর্ক করে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে না পারেন, নিজেরা নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি-কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি আজ বলে দিলাম, নাহলে পরে বলবেন যে আমি আপনাদের সতর্ক করিনি।’
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
নিজের ‘অন্য কোনও আকাঙ্ক্ষা’ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার একটাই আকাঙ্ক্ষা- দেশ এবং জাতিকে একটা সুন্দর জায়গায় রেখে ছুটিতে যাওয়া। গত সাত-আট মাস ধরে আমার যথেষ্ট হয়েছে। আমি চাই, দেশ এবং জাতিকে একটা সুন্দর জায়গায় রেখে আমরা সেনানিবাসে ফিরে আসবো।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের কারণ ব্যাখ্যা করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের কয়েকটা কারণ আছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, আমরা নিজেদের মধ্যে হানাহানিতে ব্যস্ত, একজন আরেকজনের বিরুদ্দে বিষোদগাড়ে ব্যস্ত। এটা একটা সুযোগ অপরাধীদের জন্য। যেহেতু আমরা একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে বিরাজ করছে। তারা (অপরাধীরা) খুব ভালোভাবেই জানে, যদি এসব অপরাধ করা যায়, তাহলে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
সংগঠিত ও একত্রিত তাহলে অবশ্যই সম্মিলিতভাবে এটা মোকাবিলা করা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গ টেনে সেনাপ্রধান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন না, কারণ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে জেলে; তারা প্যানিকড (আতঙ্কিত)।’
এসময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়েও কথা বলেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, ১৮ মাসের মধ্যে (নির্বাচন) করতে... সরকার হয়তো সেই দিকেই যাচ্ছে।’ নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি বন্ধ না করলে স্বাধীনতা বিপন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সেনাপ্রধান।
এসময় বিডিআর বিদ্রোহের অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের প্রক্রিয়া নষ্ট করা যাবে না। এই বিদ্রোহের সঙ্গে সত্যি যারা যুক্ত, সেই তথ্য বের করতে স্বাধীন কমিশন কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে রাওয়া ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) আব্দুল হকের সভাপতিত্বে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এবারই প্রথম দিবসটিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।