খাবারের সময় সালাম দেওয়া নিষিদ্ধ বা নাজায়েজ এ রকম একটি ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। এ ধারণাটি সঠিক নয়। কেউ খাবার খেতে থাকলে তাকে সালাম দেওয়া নাজায়েজ নয়। ‘খাওয়ার সময় সালাম দেওয়া যাবে না’ এ রকম একটি কথা হাদিস হিসেবে প্রচার করা হয়। এটি মূলত কোনো হাদিস নয়।
খাবার খেতে থাকা ব্যক্তির জন্য অন্যকে সালাম দেওয়া জায়েজ, অন্যের জন্যও তাকে সালাম দেওয়া জায়েজ। তবে এ সময় সালাম দেওয়া যদি তার কষ্ট বা বিরক্তির কারণ হয়, তাহলে সালাম দেওয়া মাকরুহ বা অপছন্দনীয়।
খাওয়ার সময় মুখে খাবার থাকা অবস্থায় কেউ যদি সালাম দেয়, তাহলে এ অবস্থায় সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয়। এ অবস্থায় সালামের উত্তর না দেওয়াই ভালো। কারণ সালামের উত্তর দিতে গেলে গলায় খাবার আটকে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে। তবে যদি মুখে লোকমা না থাকা অবস্থায় কেউ সালাম দেয়, তাহলে উত্তর দেওয়া জরুরি।
ইসলামে সালাম অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুল (সা.) বেশি বেশি সালাম দিতে উৎসাহিত করে বলেছেন সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সা.) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে তোমরা মুমিন হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন কাজের কথা বলছি যা তোমাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম দাও। (সহিহ মুসলিম: ২০৩)
তবে কিছু অবস্থায় সালাম দেওয়া অপছন্দনীয় ও নিষিদ্ধ। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, এক ব্যাক্তি একবার নবিজিকে (সা.) প্রশ্রাবরত অবস্থায় সালাম দিলো। নবিজি প্রয়োজন পূরণ শেষ করে অজু করার পর তার সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, আমাকে এ অবস্থায় দেখতে পেলে সালাম দিও না। এ অবস্থায় আমি তো তোমার সালামের উত্তর দিতে পারবো না। (সুনান ইবনে মাজা: ৩/৩৫২)