প্রকাশ: সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩:৪০ পিএম (ভিজিটর : )
দিনব্যাপী জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৪৬তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবস (ইবি) উদযাপিত হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১০টায় কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে শান্তির প্রতীক পায়রা ও আনন্দের প্রতীক বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমান। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা শেষে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ৩৬টি বিভাগ ও ল্যাবরেটরি স্কুলের দুই দিনব্যাপী শিক্ষা ও গবেষণা প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই বিপ্লবের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এসময় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, হলসমূহের প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের যৌথ সঞ্চালনা করেন টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুল ইসলাম।
দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার, ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য এবং আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম আছে কিন্তু কাজেকর্মে কোনো ইসলাম নাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয় ঘটান। কিন্তু গত ১৮ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম ত চর্চা হয়নি বরং নোংরামির চর্চা চলে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল তা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমন হওয়া উচিত, যার ইসলাম ও আধুনিক জ্ঞান থাকবে। গণঅভ্যুত্থানের পেছনে যে মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্যর ছিল সেদিকে এগিয়ে যাবে বলে আশা করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ বছরের পথচলায় সবাই অবদান রেখেছে। সবার সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় এই পর্যায়ে এসেছে। আমি আল্লাহকে ও আপনাদের সাক্ষী রেখে কিছু প্রতিজ্ঞা করতে চাই। আমি সবক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করব। যেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে এবং শহিদ হয়েছে সেই শহিদের প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই। আমাকে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি আরো বলেন, একটি পিছিয়ে পড়া জনপদে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধুমাত্র শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক মানে পরিণত করা যায়। আমি বিশ্বের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে কাজ করব। সবার পরামর্শ ও অংশীদারের ভিত্তিতে সংস্কারের মাধ্যমে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নয়নের সড়কে নিয়ে আসব। আগামীদিনের বাংলাদেশ কোনো দলের হবে না। আগামীর বাংলাদেশে হবে মানুষের বাংলাদেশ, সবার বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এছাড়াও দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক আলপনা ও বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়।