লক্ষ্মীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া মাহফিলের প্রধান অতিথি করা সম্পর্কে অবিহিত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন জামায়াত নেতা ড. রেজাউল করিম। তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। তবে তাকে মেহমান হিসেবে দাওয়াত দেওয়া হয়। অন্য ব্যস্ততার কারণে মাহফিলে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে তিনি আগেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন বলেও পোস্টে উল্লেখ করেছেন।
ড. রেজাউল করিম জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি।
এদিকে মাহফিল সম্পর্কে ন্যূনতম অবগত ছিলেন না বলে জানিয়ে ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে একটি লেখা পোস্ট করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে এ্যানি চৌধুরী ও রাত ২টার দিকে রেজাউল করিম তাদের ভেরিফাইড পেইজে স্ট্যাটাস দিয়ে মাহফিল নিয়ে তাদের মন্তব্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগীর কমিশনারের বাড়ির সামনে মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে তাফসিরুও কুরআন মাহফিল ও ইসলামী সংগীত সন্ধ্যার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে মাহফিল বন্ধ করে দেন আয়োজকরা। তাদের অভিযোগ ছিল, এ্যানি চৌধুরীকে দাওয়াত না দিয়ে জামায়াত নেতা ড. রেজাউল করিমকে প্রধান অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন ও ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান পৌরসভার কাউন্সিলর প্রার্থী। তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই মাহফিল বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ। প্রথমে বাধা দিলেও পরে মাহফিল চালিয়ে যেতে বলেছিলেন বিএনপি নেতা আলমগীর। কিন্তু আয়োজকরা তা বন্ধ করে দেন।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন,‘ লক্ষ্মীপুর ১১নং ওয়ার্ডে মেহমানকে কেন্দ্র করে মাহফিল বন্ধ!’ এ নিউজ আমার দৃষ্টিতে এসেছে। এই মাহফিলে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে সে সম্পর্কে আমি অবহিত ছিলাম না। বরং মাহফিলের মেহমান হিসেবে উপস্থিত থাকার দাওয়াত পেয়েছি। ওয়াজ মাহফিলে শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারাটাই বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু আমার অন্য ব্যস্ততার কারণে এই মাহফিলে উপস্থিত থাকতে পারবো না, তা আগেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া আমি মনে করি ওয়াজ মাহফিলের সম্মানিত প্রধান অতিথি, বক্তা ওলামায়ে কেরাম হবেন এটাই ওয়াজ মাহফিলের সৌন্দর্য। তাদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান সকলেই শুনবে এবং ইসলামের আলোকে ব্যক্তি সামাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে সাজাবে, ইহকালিন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির পথ রচনা করবে এটাই হওয়া উচিত। আমি মনে করি, যে বা যাদের ভুলের কারণে কোরআনের একটি পবিত্র মাহফিল বন্ধ হয়ে গেলো তা সত্যিই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। যারা এই মাহফিল শোনা থেকে বঞ্চিত হলেন এর দায় কে নেবে? যে সমস্ত সম্মানিত উলামায়ে কেরাম অতিথি ছিলেন তারাও বা আমাদের সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করবেন? আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। তাই, নিজেদের মধ্যে এখন ভেদাভেদের সময় নয়, বরং ঐক্যের। আমি একজন নগন্য কর্মী হিসেবে আজীবন লক্ষ্মীপুরের জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করে যেতে চাই। মহান আল্লাহ সহায় হোন।’
অপরদিকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডে একটা মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে, আমাকে দাওয়াত না করায়। এই মর্মে ফেস দ্যা পিপল ও কিছু অনলাইন পোর্টাল সত্যতা যাচাই না করে মিথ্যা নিউজ প্রচার করে। যা আমার ব্যক্তি ইমেজ ক্ষুণ্ন করেছে। এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রের অংশ। এই মাহফিল সম্পর্কে আমি ন্যূনতম অবগত নই। ফেস দ্যা পিপল ও অন্যান্য অনলাইন পোর্টালকে অনুরোধ করছি এই নিউজ প্রত্যাহার করার জন্য।’