বাংলা English
 শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
শিরোনাম: বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন      কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত      পাঁচ বিসিএসে নিয়োগ পাবে ১৮ হাজার ১৪৯ জন      ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন বিএনপির এ্যানি ও জামায়াত নেতা      মামলা থেকে খালাস পেলেন সোহেল-টুকুসহ বিএনপির ২২ নেতাকর্মী      শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা      ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস নিয়ে পিএসসির ‘কঠোর’ সিদ্ধান্ত      
জাতীয়
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের রিপোর্ট
অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতায় আগের অবস্থায় ফিরতে পারে বাংলাদেশ
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:০৪ এএম  (ভিজিটর : )
ফাইল ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জেরে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লে গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর ১০০ দিন অতিক্রম করেছে ইউনূস সরকার। এ সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারে হাত দিয়েছে তারা। এজন্য এরই মধ্যে সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এ সরকার যদি ব্যর্থ হয় তবে বাংলাদেশ আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। এমনকি সামরিক শাসনের যুগেও প্রবেশ করতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনে গৃহীত সংস্কার ও অন্যান্য বিষয়কে মূল্যায়ন করে ‘এ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হান্ড্রেড ডেজ অব রিফর্ম’ শীর্ষক দীর্ঘ ৩৭ পৃষ্ঠার রিপোর্টে এসব কথা বলেছে বেলজিয়ামভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলেছে, যদি অন্তর্বর্তী সরকার হোঁচট খায় তবে বাংলাদেশ আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। এমনকি সামরিক শাসনের যুগেও প্রবেশ করতে পারে। দীর্ঘ সময় এ সরকারের ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়। একইসঙ্গে নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছে তারা। দেশের বাইরের পক্ষগুলোকে সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বলা হয়েছে, ভারতের উচিত বাংলাদেশের জনগণের মাঝে তাদের ভাবমূর্তি মেরামতে কাজ করা। 


বেলজিয়ামভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি রিপোর্টে বলেছে- গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার তিন মাস পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা আরো স্পষ্ট হচ্ছে। একইসঙ্গে তাদের সামনে এগুনোর পথে সুপ্ত বিপদেরও আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এ সরকার আরো এক বছর, সম্ভবত এর চেয়েও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করবে বলে মনে হচ্ছে। 

তাদের মতে, শেখ হাসিনার পনেরো বছরের শাসনের পর শাসনব্যবস্থার উন্নতির এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এক প্রজন্মের সামনে এমন সুযোগ একবারই আসে। বাংলাদেশ এমন সুযোগ পেয়েছে। এ সুযোগ আরেকটি স্বৈরাচারী সরকারের উত্থানের পথ বন্ধ করতে পারে।

রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে অনেক বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শেখ হাসিনা ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছিলেন। গণঅভ্যুত্থানে তার পতন হয়েছে। এরপর ৮ই আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সরকার দ্রুতই রাজনৈতিক, শাসনব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সাহসী এজেন্ডা তুলে ধরে। বড় ধরনের পরিবর্তনের জন্য জনগণের প্রবল আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি তুলে ধরে অনেক বাংলাদেশিই হাসিনার পতনকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ (১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে) হিসেবে অভিহিত করছেন। 

তারা বলছে, এখন পর্যন্ত ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীদের প্রতি ব্যাপক সমর্থন আছে। কিন্তু জনপ্রত্যাশার ভালো-খারাপ দুই ধরনের পরিণতিই আছে। যদি সংস্কার আনতে অন্তর্বর্তী সরকার হোঁচট খায়, সম্ভবত এর পরিণতি দাঁড়াতে পারে সামান্য অগ্রগতিসহ একটি আগাম নির্বাচনে। সবচেয়ে খারাপ দৃশ্যপটে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারকে তার সামাজিক সমর্থনের ভিতকে শক্তিশালী রাখতে দ্রুত কিছু অর্জনের দিকে নজর দেয়া উচিত- যখন এ সরকার মূল সংস্কারগুলো ঘিরে ঐকমত্য গড়ে তুলছে এবং দেশকে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করছে। জাতীয় রাজনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনায় সাহায্য করতে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ড. ইউনূস প্রশাসনকে সমর্থন দেওয়া উচিত আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর। 

রিপোর্টে আরো বলা হয়, পনেরো বছর ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনার সরকার ব্যাপকভাবে অ-জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ক্ষমতা ধরে রাখতে তার সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে, বিশেষ করে পুলিশ, বিচারব্যবস্থা এবং আমলাতন্ত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সরকারবিরোধীদের ওপর নিয়মিত দমনপীড়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, চরম সামাজিক বৈষম্য ও ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি- বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে তার দল আওয়ামী লীগের সমর্থনকে দুর্বল করেছে। দলটি জানুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক জয় পেয়েছিল। তবে সে জয় এসেছিল বিরোধীদের বর্জন এবং কম ভোটার উপস্থিতির মধ্যদিয়ে। 

ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, জুনে সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটা পুনর্বহালে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ স্ফুলিঙ্গের মতো কাজ করে, যা পরের মাসে গণবিস্ফোরণে রূপ নেয়। সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং মারাত্মক দমনপীড়নসহ হাসিনার নৃশংস পদক্ষেপে ছাত্র আন্দোলন জনপ্রিয় বিদ্রোহে রূপ নেয়, যা তাকে তড়িঘড়ি করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। হাসিনার বিদায়ে যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছিল তা টিকে আছে। কিন্তু সামনের পথের রূঢ় বাস্তবতা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। এরই মধ্যে বাজে অবস্থায় থাকা অর্থনীতি ধীরে এগুচ্ছে। এক মাসের বেশি সময়ের বিক্ষোভ এবং ক্ষমতা হস্তান্তর ঘিরে অনিশ্চয়তায় সেটি আরও ধাক্কা খেয়েছে। ইউনূসের সরকার প্রধানত বিক্ষোভ-বিরোধী দমনপীড়নে ব্যাপকভাবে জড়িত একটি পুলিশ বাহিনীর ওপর নির্ভর করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছে। জনপ্রিয় সমর্থন ধরে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এর বিদ্যমান আইনে জোড়াতালি দেয়া আইনি ভিত্তির কারণে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস- ফাইল ফটো
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস- ফাইল ফটো

রিপোর্টে বলা হয়, দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনও হবে অনেক বড় অর্জন। আর অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে এ যাবৎকালের সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক হলেও এর অনেক সদস্যের সরকার ও প্রশাসন পরিচালনায় তেমন অভিজ্ঞতা নেই। প্রধান রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সমর্থন ধরে রাখা এরই মধ্যে চ্যালেঞ্জিং প্রমাণিত হচ্ছে। কেউ কেউ আগাম নির্বাচনের সুবিধার জন্য অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি ড. ইউনূসের মিত্ররাও সাংবিধানিক সংস্কার ও হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করে আসছেন। যদিও হাসিনার দল এখন বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে, তবু ড. ইউনূসকে আওয়ামী লীগপন্থি গোষ্ঠীগুলো ও ব্যক্তিদের বাধার মুখেও পড়তে হতে পারে। 

এতে আরো বলা হয়, পূরণ করা তো দূরের কথা। আকাশচুম্বী জনপ্রত্যাশা সামলানোই হবে খুবই চ্যালেঞ্জিং। অভিজ্ঞতা বলে, অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশি ক্ষমতায় থাকতে চাইবে, আগাম নির্বাচনের দাবি তত জোরদার হবে এবং তাদের বৈধতা নিয়ে আরো বেশি সন্দেহ দেখা দেবে।

ক্রাইসিস গ্রুপ বলেছে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত বাস্তবসম্মত সময়সীমার মধ্যে সংস্কার শেষ করে একটি নতুন নির্বাচন দেওয়া। এই সময় ১৮ মাসের বেশি বা দেড় বছরের বেশি হওয়া উচিত নয়।
মতামত লিখুন:
https://www.channelamericabangla.com/ad/1731844310_left-banner.gif

সর্বশেষ সংবাদ

প্রশাসনে আসছে বড় রদবদল, কে কোথায় যাচ্ছেন
আমাকে ‘ভাইরালকন্যা’ বলবেন না: সিঁথি
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে নিয়োগ, প্রার্থীর ধরন নারী-পুরুষ
ডেটিং অ্যাপ থেকে বিয়ের পিড়িতে তারকা কন্যা আলিয়া
শেষ পর্যন্ত লড়াই করার অঙ্গীকার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের

সর্বাধিক পঠিত

সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে নওগাঁ
১০০ দিনে ৮৯৬ ভুয়া তথ্যের শিকার অন্তর্বর্তী সরকার
আজ বায়ু দূষণে বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা
আশুলিয়ায় ৩ ফ্যাক্টরি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
নিজ সন্তানকে হত্যা করে থানায় গিয়ে যা বললেন বাবা

জাতীয়- এর আরো খবর

Editor: MD Lokman Hossain Raju
Address: 2540 Oxford Court(Ground Floor), Hatfield,PA 19440,USA 🇺🇸
Telephone ☎️ +1 267 222 8618,
Email: [email protected]

© 2024 Channel America Bangla
🔝